বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, প্রযুক্তিবান্ধব দক্ষ জনশক্তি গঠনে হাইটেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই। আইসিটি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃজন ও বিকাশে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে আগামীর চ্যালেঞ্জ দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ ঝিলমিল প্রকল্পে হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জ খুবই ঐতিহ্যবাহী একটি জনপদ। মেড ইন জিনজিরার হাত ধরে হালকা প্রকৌশল ও শিল্পখাত মেড ইন বাংলাদেশের বৈশ্বিক স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এখানে ছোট ছোট শিল্প কলকারখানা সারা বাংলাদেশের মধ্যে কেরানীগঞ্জকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে কেরানীগঞ্জ হবে অন্যতম চালিকাশক্তি। আর এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মূল কারিগর হিসেবে নেপথ্যে ভূমিকা রেখে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে এবং আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলার স্বপ্ন দেখছি।
কেরানীগঞ্জে হাইটেক পার্ক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ১৭টি খাল উদ্ধারের মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ, শুভাঢ্যা খাল খনন, ৫টি প্রশস্ত রাস্তা, অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্পোর্টস কমপ্লেক্সসহ বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট, ভোকেশনারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ আগামীতে কেরানীগঞ্জকে পরিণত করবে দেশের শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো সমৃদ্ধ একটি আধুনিক নগরীতে।
আজকে ৭তলা বিশিষ্ট ১৫ হাজার বর্গফুটের বিশালায়তনের হাইটেক পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এখান থেকে প্রতিবছর প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে ১ হাজার জন এবং এখানে স্থায়ীভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে ৩ হাজার মানুষের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল দেশের প্রতিটি মানুষ ভোগ করছে উল্লেখ করে বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা-সাহসিকতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে একটি প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করেছেন। যিনি বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করেছেন এবং ১৩ কোটি মানুষকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করেছেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেধা ও প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের তরুণরা চাকরি করবে না চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে। দেশের তরুণরা যেন উদ্যোক্তা ও আত্মনির্ভরশীল হতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্রেন চাইল্ড আইটি/হাইটেক পার্ক, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, স্কুল অব ফিউচার, ডিজিটাল এডুটেইনমেন্ট সেন্টারসহ দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের ভিশন, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, উদ্ভাবনী ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী ও প্রকল্প পরিচালক একেএএম ফজলুল হক বক্তব্য দেন।
বক্তব্য শেষে আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত কেরানীগঞ্জ লাল মসজিদের (দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ) শৈল্পিক সৌন্দর্য পরিদর্শন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী ও ভারতের হাইকমিশনার।