আগেকার দিনে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষই শহরে চাকরি করতে এসে মেসে থাকতেন। কেউ সপ্তাহে কেউবা মাসে একবার বাড়ি যেতেন। এক ভদ্রলোক বেশকয়েক মাস বাড়ি যাননি, একদিন সকালে তার গ্রামের বাড়ির চাকর এসে তার মেসে হাজির।
ভদ্রলোক :- কিরে তুই হঠাৎ কি মনে করে এলি, ওদিকের সব খবর ভালো তো?
চাকর:- হ্যাঁ বাবু, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সব ভালো।
বাবু :- বিচ্ছিন্ন ঘটনা, কি হয়েছে ?
চাকর :- তেমন কিছু নয়, শুধু ওই কোদালটা ভোঁতা হয়ে গেছে।
বাবু :- তা কোদালটা ভোঁতা হল কি করে?
চাকর :- কোদালের আর দোষ কি বলেন, গ্রামের বাইরে ওই পাথুরে মাটি কোপানো কি কোদালের কাজ?
বাবু :- তুই খামোখা পাথুরে মাটি কোপাতে গেলি কেন ?
চাকর:- খামোখা কেন হবে, আপনিতো বলেছিলেন লালি, আপনার পেয়ারের ঘোড়াটা মরলে যেন ওকে ভাগাড়ে না ফেলে লাল মাটিতে কবর দেওয়া হয়।
বাবু :- কি বললি,লালি মারা গেছে ? তিন বছরের ঘোড়া মরল কি করে?
চাকর :- তিন বছরের তো কি হলো, আপনার অত বড় ফলন্ত আমগাছটা কাটছিলাম, আর ঘোড়াটা সেই সময় গাছের নিচে এসে দাঁড়ালো, আর গাছটা পড়বি তো পড় ঘোড়াটার উপরেই পড়লো,তা ঘোড়া আর বাঁচে?
বাবু :- হারামজাদা, তুই আমগাছ কাটছিলি কেন বল।
চাকর :- কি করব, মা-ঠাকুরন তো আপনার সামনেই কতবার বলেছিলেন, তেনার শেষ যাত্রায় যেন ওই গাছটাই পোড়াতে দেওয়া হয়।
বাবু :- অ্যাঁ ! আমার মা আর নেই, ও-মাগো, মাকে তো বেশ তো সুস্থই দেখে এলাম, কি হয়েছিল মার ?
চাকর : শোক বাবু শোক, নাতির শোকটা সামলাতে পারলেন না।
বাবু : তারমানে ? আমার ছেলে, আমার ছেলে-টাও আর নেই। অ্যাঁ ! সে গেল কি করে ? হায়, হায়, হায়। তুই তাকেও খেয়েছিস, মানে মেরে ফেলেছিস।
চাকর :- অনেয্য কথা বলবেন না কর্তা বাবু, মা মরা দুধের শিশু কদিন বাঁচে বলুন।
তবে যাই বলুন কত্তা। এই কয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া খবর কিন্তু সবই ভালো।
হ্যা, এখন এই দেশেও রোজই এমন কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাই ঘটে চলেছে, বাকি সব মোটামুটি শান্তি পূর্ণ?