সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের হুমকি মোকাবেলায় শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর। এ কারণে তারা কম অসুস্থ হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে তাদের অসুস্থতা গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছয় না। বিজ্ঞানীরা বলেন, শিশুদের শ্বাসনালি শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাল প্রোটিন তৈরি করে, যা ভাইরাসটির মুখোমুখি হওয়ার আগেই তাকে তার পথেই থামিয়ে দেয়। গবেষকরা বলেছেন, শিশুদের একটি শক্তিশালী সহজাত প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যা বিপদগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে টের পায়।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষণার অন্যতম লেখক ড. মাসাহিরো ইয়োশিদা বলেন, শিশুদের সহজাত ইমিউন সিস্টেম আরো নমনীয় এবং নতুন হুমকির মোকাবেলায় আরো ভালোভাবে সাড়া দিতে সক্ষম। তিনি শিশুদের মধ্যে একটি খুব দ্রুত ইমিউন প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, যা ‘কভিড-১৯ দ্বারা কেন তারা কম গুরুতরভাবে প্রভাবিত হয় তা ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে’।
শিশুরা ভাইরাস ছড়াতে পারে। সে জন্য অনেক দেশে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে। ১৭ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে স্কুল শিক্ষার্থীদের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ছিল; কিন্তু গুরুতর অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হার খুবই কম। যুক্তরাজ্যে কভিড-১৯-এ ১৫ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যা এক শরও কম।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সমীক্ষায় বলা হয়, ইন্টারফেরন নামে শ্বাসনালির প্রোটিন অনুপ্রবেশকারী ভাইরাসের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষা শক্ত করতে নিকটবর্তী কোষগুলোকে একটি সংকেত পাঠায়। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের এগুলো আরো অনেক বেশি ও শক্তিশালী থাকে। শিশুদের শরীরে এদের উৎপাদনও হয় বেশি। ইন্টারফেরনকে কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য থেরাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ৭৮ জন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের রক্তের নমুনা পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে ফলাফলগুলো তৈরি করা হয়।
ইউসিএল গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক ডা. মার্কো নিকোলিক বলেন, একবার যখন ভাইরাসটি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ইমিউন সিস্টেম চেষ্টা করে এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার কারণে অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।
সূত্র : দ্য ন্যাশনাল