হায়দরাবাদের এক ঐতিহাসিক স্থাপনা কুলি কুতুব শাহি সমাধিক্ষেত্র। ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি এই স্থাপনা। ভারতের গোলকুণ্ডার কুলি কুতুব শাহি রাজবংশের বিভিন্ন শাসকের তৈরি করা বিভিন্ন সমাধি ও মসজিদ রয়েছে এই সমাধিক্ষেত্রে। বর্তমানে এটি ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা করছে।
ডিজিটাল টুইন কী?
ডিজিটাল টুইন বা ডিজিটাল যমজ হলো বস্তুর ভার্চুয়াল মডেল। কোনো বস্তুর সূক্ষ্ম প্রতিলিপি, যা কম্পিউটারের ক্লাউডে থাকবে।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটির দুনিয়ায় থাকবে বাস্তবিক দুনিয়ার কোনো বস্তু, স্থান, শহর, দেশ এমনকি পৃথিবীর একটি সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল প্রতিলিপি। সেটিরই একটি অংশ এই ডিজিটাল টুইন। ডিজিটাল যমজে একটি থ্রিডি স্ক্যানিং ব্যবহার করে প্রতিলিপি তৈরি করা হয় কম্পিউটারে। মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি করা সিমুলেশন সংরক্ষণ করা হয় ক্লাউডে।
ডিজিটাল যমজের মাধ্যমে যে শুধু ঐতিহাসিক নিদর্শনই সংরক্ষণ করা যাবে তা-ই নয়, এটির অন্যান্য ব্যবহারও রয়েছে। যেমন—কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর আগে সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নেওয়া যেতে পারে। যেকোনো পণ্য বাজারে নিয়ে আসার আগে ভার্চুয়াল প্রতিলিপি তৈরি করে পরীক্ষা করা যাবে।
কুতুব শাহ সমাধির ডিজিটাল টুইন
১০৬ একর জুড়ে কুতুব শাহি সমাধিক্ষেত্রটি বিশ্বের একটি অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন। বর্তমানে ভারতের প্রায় ৫০টি ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে একটি। ১০ হাজার বর্গমিটারের বেশি সাইটের ১০.৭ বিলিয়ন ডাটা-পয়েন্ট সমৃদ্ধ টুইন তৈরি করেছে হেক্সাগন। সমাধিটির ডিজিটাল উপস্থাপনা তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে থ্রিডি স্ক্যানিং, জিওস্পেশাল ম্যাপিং, রিয়ালিটি ক্যাপচারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি। এই ডিজিটাল যমজ তৈরির সময় সংগ্রহ করা হয়েছে ৬০০ গিগাবাইট ডাটা। এই দূরদর্শী উদ্ভাবন এবং বাস্তব প্রযুক্তি সমাধিক্ষেত্রটি সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সমাধির প্রতিটি অংশের আবহাওয়া, বায়বীয় অবস্থা, তাপমাত্রা, গতিবিধি—সব ধরনের তথ্য এটির ডিজিটাল সংস্করণে দেখাবে। এর ফলে সমাধির যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগাম বার্তা পাওয়া যাবে এবং সতর্ক হওয়া যাবে।
ডিজিটাল টুইন যে শুধু কোনো স্থাপনা, বিল্ডিংয়ের তৈরি করা যাবে তা কিন্তু নয়। যেকোনো শহর, বন্দর এমনকি পুরো পৃথিবীর ডিজিটাল টুইনও তৈরি করা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার কম্পানি এনভিডিয়া পৃথিবীর ডিজিটাল টুইন তৈরি করতে যাচ্ছে। পৃথিবীর আরো বৃহৎ তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর জলবায়ু পর্যবেক্ষণে আরো বেশি নিখুঁত ডাটা সংগ্রহ করা যাবে। যেকোনো অঞ্চলের জলবায়ু অন্য অঞ্চলে কিরূপ প্রভাব ফেলবে সে সম্পর্কে আগাম বার্তাও পাওয়া যাবে।