Saturday, April 20, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামউপকূলে জলদস্যু আতঙ্ক: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে হবে

উপকূলে জলদস্যু আতঙ্ক: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে হবে

তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের সুন্দরবন এলাকা আনুষ্ঠানিকভাবে জলদস্যু ও বনদস্যুমুক্ত হয়েছিল। সে সময় দস্যুদের ২৬টি গ্রুপ আত্মসমর্পণ করেছিল। এটি ছিল একটি বড় স্বস্তিদায়ক ঘটনা। কারণ দস্যুদের উৎপাতের কারণে এসব এলাকা থেকে যথাযথভাবে মৎস্য ও অন্যান্য সম্পদ আহরণ করা যাচ্ছিল না।

দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও সুন্দরবনে ভ্রমণে যেতে ভয় পেতেন। ফলে সরকার বঞ্চিত হতো এ খাতে রাজস্ব আয় থেকে। সুন্দরবন এলাকাকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর সেখানে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনক, উপকূলীয় এলাকায় আবারও দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। মঙ্গলবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, উপকূলীয় জেলা বরগুনার সর্ব দক্ষিণের উপজেলা পাথরঘাটায় জলদস্যুদের উৎপাতে জেলেরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, দেশের সামুদ্রিক মাছের চাহিদার বড় অংশ আসে এ উপজেলা থেকে। সেখানে অন্তত ২০ হাজার জেলে সরাসরি মৎস্য আহরণের সঙ্গে জড়িত। পরোক্ষভাবে মাছের ব্যবসায় সম্পৃক্ত আরও কয়েক হাজার মানুষ। জলদস্যুদের উৎপাতে জেলেরা নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করতে পারছেন না। সাগরে গেলেই তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালায় জলদস্যুরা। লুট করে নেয় জেলেদের আহরিত মাছ। কখনো কখনো জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য নির্যাতনও চালানো হয়। এসব এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় জেলেরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিপদের কথা জানাতেও পারেন না। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

মৎস্যজীবীরা মাছ আহরণ করে জাতীয় চাহিদা পূরণ এবং আয়বৃদ্ধিতে অবদান রাখলেও জলদস্যুদের অব্যাহত তাণ্ডবে তাদের নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নেই, এটি দুঃখজনক। জেলেদের জীবন ও জীবিকা যাতে কোনোভাবেই হুমকির সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা সরকারের। উপকূলীয় এলাকায় জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ করতে হবে যে কোনো উপায়ে। এ ব্যাপারে র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের সক্রিয় ভূমিকা কাম্য।

উপকূলীয় এলাকায় টহল বৃদ্ধিসহ এসব এলাকার ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে তাদের। সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলকে নিরাপদ রাখতে এসব এলাকায় কয়েকটি ক্যাম্প গড়ে তোলা যেতে পারে। আরেকটি বড় কাজ হবে, ইতঃপূর্বে যেসব জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছিল, তাদের নজরদারিতে রাখা।

তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে বৈধ কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকত, আবার দস্যুবৃত্তিতে ফিরে আসত না। কাজেই এ বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা উচিত। জলদস্যুতার অবসান এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে মনে করি আমরা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments