যুক্তরাষ্ট্র-চীন। দুই পরাশক্তির মধ্যে তীব্র উত্তেজনা। এরই মধ্যে চীন সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। এ সময়ে তিনি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ (কমিউনিকেশন) উন্মুক্ত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ তথ্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা। মে মাসে উইলিয়াম বার্নস এই সফরে যান। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে রিপোর্ট করে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এত বলা হয়, বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে শীতল করার চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন। এই দুই পরাশক্তির মধ্যে মিসকমিউনিকেশন বা ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুর্ঘটনাবশত একটি বড় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা আছে। এর ভিতর এই যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন এবং মিটিংয়ের জন্য শিডিউলের জন্য চাপ দিয়েছে। তার প্রেক্ষিতে এই সফরের খবর এলো। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, গত মাসে বেইজিং সফর করেছেন সিআইএ পরিচালক বার্নস। এ সময়ে তিনি চীনের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গোয়েন্দা চ্যানেলে যোগাযোগের পথ উন্মুক্ত রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সফরে তিনি চীনের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে বেইজিংয়ে কোনো রাজনৈতিক অথবা পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কোনো নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি।
এমন সফর সম্পর্কে সিআইএ সাধারণত কোনো ঘোষণা দেয় না। তারা উইলিয়াম বার্নসের চীন সফর নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরে বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যু, চীনের মানবাধিকার রেকর্ড, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতা ও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে এই উত্তেজনা। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, মস্কোকে সামরিক রসদ সরবরাহ দিচ্ছে চীন। তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন।
ওদিকে বাইডেন প্রশাসনের কিছু সমালোচক বেইজিং ইস্যুতে ওয়াশিংটনের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, চীনের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে যুক্ত থাকার পরও তাদেরকে বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মনোভাব পরিবর্তনে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফেব্রুয়ারিতে চীন সফরে আসার পরিকল্পনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের। কিন্তু চীনের গোয়েন্দা বেলুন গুলি করে ভূপাতিত করা নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনায় তা স্থগিত করা হয়। ওদিকে শুক্রবার সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা সম্মেলনে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফুর সঙ্গে করমর্দন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। কিন্তু দুই পক্ষ তেমন কথা বিনিময় করেনি। এর আগে লি শ্যাংফুর সঙ্গে লয়েড অস্টিনের একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চীন।