পৃথিবীতে ঈমান হলো সব কল্যাণের মূল। যার ঈমান আছে সে ইহকালে ও পরকালে বহুবিদ কল্যাণ লাভ করে। তার সামনে কল্যাণের বহু দ্বার খুলে যায়। ঠিক যেমন একটি সুফলা গাছ।
যা থেকে অসংখ্য গাছের জন্ম হয় এবং তার দ্বারা পরম্পরায় মানুষ উপকৃত হতে থাকে, যার কল্যাণের দ্বার কখনোই শেষ হয় না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি কি লক্ষ করো না আল্লাহ কিভাবে উপমা দিয়ে থাকেন? সত্বাক্যের তুলনা উত্কৃষ্ট গাছের মতো। যার মূল সুদৃঢ় ও যার শাখা-প্রশাখা ঊর্ধ্বে বিস্তৃত। যা প্রত্যেক মৌসুমে তার ফলদান করে স্বীয় প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। ’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ২৪-২৫)
উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, সত্বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর সাক্ষ্য প্রদান করা। উত্কৃষ্ট গাছ দ্বারা মুমিন এবং ‘মূল সুদৃঢ়’ দ্বারা মুমিনের অন্তরে প্রোথিত ঈমান উদ্দেশ্য। আর ‘শাখা-প্রশাখা ঊর্ধ্বে বিস্তৃত’ বাক্য দ্বারা বোঝানো হয়েছে মুমিনের অন্তরে যখন ঈমান সুদৃঢ় হয়, তখন তার আমল আসমানে ওঠে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)
আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা সত্বাক্যকে (তাওহিদের সাক্ষ্য) উত্কৃষ্ট গাছের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কেননা ঈমান উত্তম আমল উৎপন্ন করে যেমন উত্কৃষ্ট গাছ উপকারী ফল উৎপন্ন করে। সব আলেম এ বিষয়ে একমত যে সত্বাক্য দ্বারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর সাক্ষ্য উদ্দেশ্য। কারণ এটাই প্রকাশ্য ও অপ্রাকাশ্য সব আমলের প্রাণসত্তা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা সব আমলই এই বাক্যের ফলস্বরূপ। ’ (ইলামুল মুওয়াক্কিয়িন : ১/১৩২)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমাকে এমন একটা গাছের খবর দাও, যার দৃষ্টান্ত মুসলিমের মতো। যা সর্বদা তার প্রতিপালকের নির্দেশে খাদ্য দান করে, আর এর পাতাও ঝরে না। (তা হলো খেজুর গাছ)’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১৪৪)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া