হাদিস শরিফে এসেছে, ঈমানের ৭৭টি শাখা-প্রশাখা রয়েছে। এর প্রথমটি হলো (কলেমা তাইয়্যেবাহ) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ [আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তাআলার রাসুল]।
আর ঈমানের সর্বশেষটি হলো ‘রাস্তা বা পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা।’ (বুখারি, হাদিস : ৯; মুসলিম, হাদিস : ৩৫)।
ঈমান বা বিশ্বাসের ৭৭টি শাখা তিন ভাগে বিভক্ত।
(ক) প্রথম সাতটি মুখ বা বাক্শক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, (খ) দ্বিতীয় ৩০টি মন বা বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত, (গ) তৃতীয় ৪০টি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা কর্মের সঙ্গে সংযুক্ত।
মুখের জবানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঈমানের ৭ বিষয়
(১) আল্লাহর একত্ব মুখে স্বীকার করা। (২) কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা। (৩) দ্বিনি ইলম শিক্ষা করা। (৪) দ্বিনি ইলম শিক্ষা দেওয়া এবং দ্বিনের প্রচার করা। (৫) দোয়া করা (নিজের ও অন্যের কল্যাণ কামনা করা)। (৬) জিকির করা (আল্লাহর গুণাবলি আলোচনা করা)। স্থান, কাল, পাত্র ও বিষয় নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট মাসনুন (হাদিসে বর্ণিত) দোয়াসমূহ অন্যতম জিকির। (৭) বাহুল্য কথাবার্তা বলা ও শোনা থেকে বিরত থাকা।
মনের বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঈমানের ৩০ বিষয়
(১) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। (২) আল্লাহ ছাড়া অন্য সব কিছু তাঁরই সৃষ্টি—এই বিশ্বাস করা। (৩) ফেরেশতাদের অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাস করা। (৪) আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস। (৫) সব নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস। (৬) ভালো-মন্দ তাকদিরের ওপর বিশ্বাস। (৭) কিয়ামত ও বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস। (৮) জান্নাত বা বেহেশতের প্রতি বিশ্বাস। (৯) জাহান্নাম বা দোজখের প্রতি বিশ্বাস। (১০) আল্লাহর প্রতি ভক্তি ও মহব্বত। (১১) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অন্যদের প্রতি ভালোবাসা। (১২) নবীজি (সা.)-কে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা করা। (১৩) সব কাজে রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের অনুসরণ করা। (১৪) যেকোনো কাজ ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা। (১৫) রিয়াকারী (আত্মপ্রদর্শন) ও মোনাফেকি পরিত্যাগ করা। (১৬) সর্বক্ষণ অন্তরে আল্লাহর ভয় রাখা। (১৭) আল্লাহর রহমতের আশা রাখা। (১৮) কখনো কোনো গুনাহর কাজ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই তওবা করা। (১৯) সর্বদা কথায় ও কাজে আল্লাহ তাআলার নিয়ামতসমূহের কৃতজ্ঞতা আদায় করতে থাকা। (২০) বৈধ ওয়াদা পালন করা। (২১) কাম রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করা। (২২) বিপদে ধৈর্য ধারণ করা। (২৩) আল্লাহ তাআলা যখন যে অবস্থায় রাখেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকা। (২৪) বিনয়ী হওয়া। (২৫) বড়দের সম্মান এবং ছোটদের স্নেহ করা। (২৬) গর্ব ও অহংকার পরিত্যাগ করা। (২৭) হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করা। (২৮) রাগ-ক্রোধ দমন করা, কারো সঙ্গে মনোমালিন্য না রাখা। (২৯) দুনিয়ার (ধন-সম্পদের) মহব্বত না রাখা। (৩০) লজ্জা থাকা।