যাযাবর জীবনের অর্থ
যাযাবর এমন লোকদের বলে, যাদের সুনির্দিষ্ট কোনো বাসস্থান থাকে না। যারা জীবন-জীবিকার তাগিদে নিয়ত ভ্রমণ করতে থাকে।
ইসলাম মানুষকে সমাজ-সভ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন এবং যাযাবর জীবন থেকে নিরুৎসাহ করে।
নিন্দনীয় হওয়া কারণ
কোরআন ও হাদিসে জনবিচ্ছিন্ন যাযাবর জীবনের নিন্দনীয় কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যেমন—
১. দ্বিনি শিক্ষা থেকে দূরে : যাযাবর ও লোকালয় থেকে যারা বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করে তারা দ্বিনি শিক্ষা থেকে দূরে থাকে।
৪. বিপৎসংকুল জীবন : যাযাবররা সাধারণ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে দূরে থাকে। ফলে তাদের জীবন হয় বিপৎসংকুল। রাসুলুল্লাহ (সা.) লোকালয় থেকে দূরে বসবাসকারীদের সতর্ক করে বলেন, নেকড়ে দলচ্যুত বকরিটিকেই খেয়ে থাকে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫৪৭)
৫. শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে দূরে : যাযাবর জীবনের প্রতি নিরুৎসাহিত করার আরেকটি কারণ হলো, যাযাবররা শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকে। কাজি ইয়াজ (রহ.) বলেন, লোকালয় থেকে দূরে বসবাসকারীদের অন্তর কঠোর হয় এবং তাদের দয়ামায়া কম থাকে। কেননা মানুষের সঙ্গে মেলামেশা কম হয় এবং জ্ঞান ও জ্ঞানীদের সংস্পর্শ থেকে তারা দূরে থাকে। (মিরকাতুল মাফাতিহ : ৭/২৭৯)
যখন নিন্দনীয় নয়
যে ব্যক্তি বিশেষ অপারগতার কারণে যাযাবরের জীবন বেছে নেয় এবং লোকালয় থেকে দূরে থাকলেও যাদের দ্বিন পালনে কোনো সমস্যা হয় না, তাদের জন্য যাযাবর জীবন নিন্দনীয় নয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মরুবাসীদের কেউ কেউ আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে এবং যা ব্যয় করে তাকে আল্লাহর সান্নিধ্য ও রাসুলের দোয়া লাভের উপায় মনে করে। বাস্তবেই তা তাদের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপায়; আল্লাহ তাদের নিজ রহমতে দাখিল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৯৯)
মর্যাদা লাভের সুযোগ
দ্বিন পালন তথা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে যাযাবররাও ইহকাল ও পরকালে মর্যাদা লাভ করতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন, যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো, তবে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমাণও লাঘব করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১৪)
আল্লাহ সবার জীবনকে সুন্দর করুন। আমিন।