Monday, March 20, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামইভিএমে ভোটগ্রহণ: সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করতে হবে

ইভিএমে ভোটগ্রহণ: সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করতে হবে

রাজনৈতিক দলগুলো ও ভোটারদের আস্থা অর্জন ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা উচিত হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, শনিবার আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছে। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইসি বলছে, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস আছে, তারা আগে সেটা দূর করতে চায়। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দেশে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এটা ঠিক, বিশ্ব প্রযুক্তিগত দিক থেকে এগিয়ে চলেছে। সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো জরুরিও বটে। এ জন্য এরই মধ্যে ভোটারদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভোটারদের সন্দেহ দূর করে আস্থায় ফেরানো। ইভিএমের মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে নির্বাচনে কারচুপি করার সুযোগ আছে বলে মনে করেন অনেক ভোটার। ভোটারদের এ সন্দেহ দূর করা না গেলে ইভিএমে ভোটগ্রহণের পর নির্বাচনের ফলাফল বিতর্কিত হতে পারে।

তাছাড়া দেশে ব্যবহৃত ইভিএম ত্রুটিমুক্ত নয়। ইতঃপূর্বে যেসব স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়েছে, তাতে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। ইভিএমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার গতি মন্থর হয়ে পড়ায় এবং অনেক কেন্দ্রে ইভিএম বিড়ম্বনার কারণে কিছু ভোটার ভোট দিতে পারেননি। এছাড়া আঙুলের ছাপ না মেলায় অনেকে ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন। ফলে নির্বাচনে ভোট পড়েছে কম। স্পষ্টতই এসব ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ ও নিুমানের বলে প্রতীয়মান হয়েছে আমাদের কাছে। বিশেষজ্ঞরাও তুলেছেন এ অভিযোগ।

বস্তুত ভোটগ্রহণে ইভিএম পদ্ধতি যে ত্রুটিমুক্ত নয়, তা বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে অনেক দেশে ইভিএমে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যে, ভোটপ্রদানের সঙ্গে সঙ্গে একটি কাগজের স্লিপ বেরিয়ে আসে এবং সেটি ব্যালট বাক্সে ফেলা হয়। অর্থাৎ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দুই ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে।

আবার অনেক দেশ ইভিএম পদ্ধতিতে যাওয়ার পর আবার তা থেকে সরে যাওয়ার কথাও ভাবছে বলে তথ্য রয়েছে। এ বাস্তবতায় দেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করা হলে তা যে ত্রুটিপূর্ণ নয়, ভোটারদের মধ্যে সেই বিশ্বাস জন্মনোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। জনগণ যেন মনে না করে, নির্বাচনে ইভিএম তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এজন্য পছন্দের প্রার্থীকে দেওয়া ভোট মেশিনের পাশাপাশি ছাপা কাগজেও যাতে সংরক্ষিত হয় এবং ভোটদাতা তার প্রমাণ পায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে ভোটারদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে। সব মিলে এ ক্ষেত্রে একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স থাকা প্রয়োজন। মোট কথা, শতভাগ কার্যকারিতা এবং সুষ্ঠু ভোট গণনা নিশ্চিত করেই আগামী সাধারণ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করি আমরা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments