মহান আল্লাহ ও মহান রাসূল (সাঃ) এর প্রেমে, আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আনুগত্যে, সাহাবায়ে কেরাম ও আউলিয়ায়ে কেরামের অনুস্বরণে, কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামী খেলাফত পূণরুদ্ধারে শাহাদাতে মাওলা আলী (রাঃ) উপলক্ষে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর উদ্দ্যোগে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্থ নবান্ন রেস্টুরেন্ট হলে গত ২২ এপ্রিল রোজ জুমাবার বাদ এশা হতে মধ্যরাত পর্যন্ত “শানে শাহাদাতে মাওলা আলী (রাঃ) মাহফিল” অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, সালাতু সালাম ও না’ত শরীফ পাঠের মাধ্যমে মাহফিল শুরু হয়।
কুরআন তেলাওয়াত করেন হাজেফ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী ও না’ত শরীফ পাঠ করেন মাওলানা মুহাম্মদ নুরুন্নবী ফারুকী ও ওমর ফারুক হুসাইন। অত্র পবিত্র শানে শাহাদাতে মাওলা আলী (রাঃ) মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুর রহীম মাহমুদ ও বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী, সহ-সভাপতিবৃন্দ মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, মাওলানা মোহাম্মদ নুরুন্নবী ফারুকী ও মুহাম্মদ ওমর ফারুক। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা জনাব আনিসুর রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক রিমন ইসলাম, ও নেতৃবৃন্দ সানাউল হক, নাজমুল গনী, মিরাজ কাউসার, মুহাম্মদ দেলওয়ার প্রমুখ।
বক্তগণ বলেন, ইসলামের প্রকৃত ধারা আহলে সুন্নাতের মূল বিষয় হলো তাওহীদ-রেসালতের প্রেমে আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আনুগত্য করা, যা সাহাবী সহ সকল উম্মতের জন্য ঈমানের অপরিহার্য্য শর্ত। বক্তাগণ বলেন, যারা কোন না কোনভাবে আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের শ্রেষ্ঠত্ব, পবিত্রতা ও আনুগত্য মানতে অস্বীকার করে, তারা তাওহীদ ও রেসালাতের আনুগত্য থেকে বর্হিভূত। বক্তগণ আরো বলেন যে, এমন কি সাহাবায়ে কেরামও ঈমান, দ্বীন ও খেলাফতের মধ্যে থাকার জন্য আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের খেলাফত ও ইমামত মানতে বাধ্য। বক্তগণ বলেন, সাধারণত: যারা খোলাফায়ে রাশেদীনের আনুগত্য মানে না, তারা রাফেজী এবং যারা আহলে বায়াতের পবিত্রতা ও আনুগত্য মানে না তারা খারেজী। বক্তগণ উল্লেখ করেন যে, বাতেল ফেরকা খারেজী উগ্রবাদই মাওলা আলী (রাঃ) কে শহীদ করে।
পবিত্র হাদীস শরীফ অনুযায়ী ঃ ৩০ বছরের ইসলামী খেলাফত বা খোলাফায়ে রাশেদীনের ইসলামী সোনালী যুগের সমাপ্তি শুরু হয় মূলতঃ খারেজীবাদের হত্যা ও উমাইয়্যাদের গোত্রীয় উত্থানের মাধ্যমে। ৬১ হিজরীর ১০ই মুহররম কাফের এজিদ কর্তৃক ইমাম হুসাইন (রাঃ), আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরামের শাহাদাতের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা ঈমান, দ্বীন, খেলাফত পরিপূর্ণভাবে উৎখাত হয়। আর সে কারণেই আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের ঈমানী ও দ্বীনি আনুগত্য ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা সংগঠন ইসলামের প্রকৃত পথে নেই। বর্তমান যুগে যারা আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আনুগত্যের দিকে আহবান করছে, তারাই প্রকৃত ইসলাম বা আহলে সুন্নাতের অনুসারী।
বক্তাগণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর পক্ষ থেকে সবাইকে নবীপ্রেমে ইসলামের প্রকৃতধারা আহলে সুন্নাতের পতাকার তলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আহলে বায়াত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আনুগত্যের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় এবং করোনার প্রকোপ থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে জিকির, সালাতু সালাম, ক্বিয়াম, মুনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে “শানে শাহাদাতে মাওলা আলী (রাঃ) মাহফিল” সমাপ্ত হয়।