নিকটবর্তী হওয়া মহান আল্লাহর একটি কর্মবাচক গুণ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেকে নৈকট্যের গুণে গুণান্বিত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দিই।
সুতরাং তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার ওপর ঈমান আনুক, যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৬)
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো, আল্লাহ তাঁর মর্যাদা ও শান অনুসারে বান্দার নিকটবর্তী। কোনো প্রকার রূপকার্থ ছাড়াই প্রকৃতার্থে তিনি নিকটবর্তী। আল্লাহ বান্দার নিকটবর্তী তাঁর সত্তা ও জ্ঞানের মাধ্যমে। বান্দার নিকটবর্তী হন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো আর তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করো। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটে, তিনি আহ্বানে সাড়া দেন। ’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৬১)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘কোরআনের যেসব স্থানে আল্লাহর নৈকট্যের বর্ণনা এসেছে সব ক্ষেত্রে তাঁর সত্তার মাধ্যমে নিকটবর্তী হওয়া আবশ্যক নয়। কোরআনের বাচনভঙ্গি দ্বারা তা স্পষ্ট হয়ে যায়। ’ (মাজমুউল ফাতাওয়া : ৬/১৪)
আল্লাহ সব সময় বান্দার নিকটবর্তী। যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনি অপেক্ষাও নিকটতর। ’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ১৬)
কিন্তু বান্দা যখন আল্লাহর প্রার্থনা ও ইবাদতে মগ্ন হয়, তখন আল্লাহর নৈকট্য বেশি অর্জিত হয়। কোরআনে যেমনটি নির্দেশ করা হয়েছে—‘তুমি সিজদা করো এবং নৈকট্য অর্জন করো। ’
(সুরা : আলাক, আয়াত : ১৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটবর্তী ও সাড়া দানকারী। ’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৬১)
ইমাম তাবারি (রহ.) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটবর্তী তাদের যারা একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদত করে এবং তাঁর কাছে তাওবায় আগ্রহী হয়। এমন বান্দা ডাকলে আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দেন। ’ (তাফসিরে তাবারি : ১২/৪৫৪)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া