আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ইবনে গাফেল ইবনে হাবিব (রা.) ছিলেন প্রথম যুগের অগ্রগণ্য সাহাবিদের একজন। তিনি বদর যুদ্ধসহ সব যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গী ছিলেন। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি রাসুল (সা.)-এর জুতা বহনকারী সাহাবি হিসেবে খ্যাত ছিলেন। তাঁর বর্ণনা মতে, তিনি ষষ্ঠ নম্বরে ইসলাম গ্রহণ করেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ৩২২৩৩)
তিনি অত্যন্ত বিশুদ্ধ ভাষায় কোরআন তিলাওয়াত করতেন। তাঁর কোরআন তিলাওয়াতের প্রশংসা করেছেন মহানবী (সা.)। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোরআন যেভাবে নাজিল হয়েছে সেভাবে পড়তে চায়, সে যেন ইবনে মাসউদের মতো পড়ে। (মুসনাদে আহমাদ)
তাঁর সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর সম্পর্ক এতটাই দৃঢ় ছিল যে অনেকে তাঁকে মহানবী (সা.)-এর পরিবারের সদস্য ভাবতেন। তিনি ও তাঁর মা প্রায়ই মহানবী (সা.)-এর বাড়ি যেতেন। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, আমরা মদিনায় এসে ইবনে মাসউদকে রাসুল (সা.)-এর পরিবারের সদস্য হিসেবেই মনে করতাম। কেননা রাসুল (সা.)-এর কাছে তাঁর ও তাঁর মায়ের অধিক পরিমাণে যাওয়া-আসা ছিল। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮০৬)
নবীজির সান্নিধ্য লাভ করতে করতে তিনি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন যে তাঁর আচার-আচরণ ও চলাফেরায় নবীজির প্রভাব পরিলক্ষিত হতো। হজরত হুজাইফা (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কিরামের মধ্য থেকে চলাফেরা ও আচার-ব্যবহারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮০৭)
তাঁর প্রশংসা করতে গিয়ে নবীজি (সা.) বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের পা কিয়ামতের দিবসে আমলের পাল্লায় উহুদ পাহাড় থেকে বেশি ভারী হবে। (মুসনাদে আহমাদ)
তাই সাহাবায়ে কিরামও তাঁর প্রতি সুধারণা পোষণ করতেন। হজরত আলী (রা.) বলেন, যদি আমি কাউকে বিনা পরামর্শে আমির নিযুক্ত করি, তাহলে ইবনে মাসউদকে করব। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮০৮)
একটি বর্ণনা মতে, ইবনে মাসউদ (রা.) জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবির একজন ছিলেন (আল ইন্তিক্বা : ৩/৯৮৭)
তিনি ৩২ হিজরিতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। (আল ইস্তিআব ৩/৯৮৭/১৬৫৯, উসদুল গাবাহ ৩/৩৮১/৩১৮২, আল ইসাবাহ ৪/১৯৮/৪৯৭০)
মহান আল্লাহ তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করুন। আমিন।