বাবা আমার বলতেন প্রায় দেশে থাকিতে
রাস্তাঘাটে চলাফেরায় বিপদ যদি আসে
রিপোর্ট করবে সাথে সাথে পুলিশের কাছে।
বহু বছর পরে
হঠাৎ একদিন পড়েছিলাম সত্যি বিপদে।
কি করি? কাকে বলি? ভাবছি আমি বসে,
পড়ল মনে হঠাৎ তখন বাবার কথা শেষে।
সরাসরি চলে গেলাম ওসি বাবুর কাছে,
বলতে কথা ধরে মোরে ঢুকালো হাজতে।
অপরাধটি কী আমার জানতে যখন চাই?
পঞ্চাশ হাজার না দিলে কোন কথা নাই।
টাকা আমি কোথায় পাবো?
থাকিনে এই দেশে।
বলে বেটা ডলার পাউন্ড দেন যা কিছু আছে।
বুঝলে কেমনে আমার কাছে ডলার পাউন্ড আছে?
এত কথা বলার সময় নেই আমার কাছে,
আজান দিছে মসজিদে নামাজে ডাকতিছে।
বেশ কিছুক্ষণ এমন করে চলিতে লাগিল।
পুলিশের এক কর্মকর্তা আসিয়া বলিল,
বড় স্যারে কল করিছে আসেন আমার সাথে।
সন্ধ্যা এখন রাত হয়েছে, পেটে বড় খিদে,
থাকতে হবে জেলে আজ পড়েছি বিপদে।
এসপি সাহেব ক্ষমা চেয়ে বসিতে বলিল,
সঙ্গে সঙ্গে ওসিকেও তলব করিল।
মাথায় আমার প্রশ্ন তখন ঘুরপাক করিল,
ঘটনার আগাগোড়া কি করে জানিল?
আমাকেই বা কী করে সকলে চিনিলো?
ওসি সাহেব এসেই তখন হাতজোড় করিল।
এরই মাঝে হোটেলের ম্যানেজার আসিল,
যত্ন সহকারে তার হোটেলে নিয়ে গেল।
যা কিছু দরকার তার ব্যবস্থাও করিল।
হতভম্ব হয়ে গেলাম সবকিছু দেখিয়া,
বুঝিতে পারিলাম শেষে ঘটনা জানিয়া।
দেশ থেকে ফিরে আমি সুইডেনে এসে
বলেছিলাম ঘটনাটি বাবার পাশে বসে।
প্রথমে রেগে ছিলেন বাবা ঘটনা শুনিয়া,
ধীরে ধীরে শান্ত হলেন সব কিছু জানিয়া।
চোখ ভরা জলে বাবা আবেগের মাঝে
কেঁদেছিলেন কিছুক্ষণ আপ্লুত হয়ে।
গভীর ভালোবাসা দেশের প্রতি,
বেড়েছিল আরো বেশি দেখে সেই স্মৃতি।
সেদিনের সেই কথা আজও মনে জাগে,
ঘটেছিল ঘটনাটি বহু বছর আগে।
পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করিয়া,
ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ করিতে গিয়া,
বেঁচে থাকতে চাই আমরা জীবন ভরিয়া,
জীবনটি যদি আরও সুন্দর হতো
পুরনো স্মৃতিগুলোও মধুর লাগিত।