Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeজাতীয়আইন নিয়ে সংসদে বাহাস

আইন নিয়ে সংসদে বাহাস

অবসর গ্রহণকারী বিচারকদের জন্য উৎসব ভাতা ও বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদানের বিধান রেখে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন-২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। বিলের বিরোধিতা করেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেছেন, দেশে ন্যায়বিচার নেই। আইন পাসের আগে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, আমাকে আইন শেখাতে আসবেন না। যখন ইনডেমনিটি পাস করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আটকে রাখা হয়েছিল তখন ন্যায়বিচার কোথায় ছিল? গতকাল মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ‘সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ রহিত করে মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিলটি পুনঃপ্রণয়ন করা হয়েছে। বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ। তবে তার সেই আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলের বিরোধিতার জন্য ফ্লোর নিয়ে বিএনপি’র হারুনুর রশীদ বলেন, বিচারকদের আরও সুযোগ দেন। আরও বিচারক নিয়োগ দেন। বিচারপ্রার্থীরা বিচার চাইতে চাইতে মারা যাচ্ছে। একটা বিচার শেষ করতে ৩০ বছর লাগছে। কিছুদিন আগে দেখলাম, হাজী সেলিম ১০ বছরের দণ্ডিত হয়ে বিদেশে গেলেন চিকিৎসা করাতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আইনমন্ত্রী জানালেন, তিনি আইন মেনেই গিয়েছেন। অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছে, তারা বলছেন সুযোগ নেই। বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনের অধিকার আছে কি না? আপনারা কর্মসূচি করছেন প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে। এখানে বৈষম্য হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে কী সভ্য, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে পারবো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক নারীকে যেভাবে নিপীড়ন করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নামধারী গুণ্ডারা যা করেছে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আইন তৈরি করছেন। মানুষের জন্য করছেন তো? আইনের ব্যাপারে আপত্তি নেই। কিন্তু আগে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশে এখন বড় সংকট সুশাসনের। ন্যায়বিচার ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা সুশাসন।
জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, দুঃখে কাঁদবো না হাসবো বলতে পারছি না। আমাকে তিনি যে আপনার মাধ্যমে (স্পিকার) জ্ঞান দিলেন। আমার না হয় কাজে লাগবে। কিন্তু উনার কতটুকু কাজে লাগবে জানি না। পঁচাত্তরে জাতির পিতার হত্যার পর বিচার হয়েছিল? ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করে বিচার পাওয়ার পথ বন্ধ করেছিলেন। উনি আমাকে বিচার শেখাচ্ছেন! উনারা বলবেন খন্দকার মোশতাক করেছিলেন। তারপর তো আপনারা ক্ষমতায় ছিলেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ তুলে নিয়েছিলেন? আমাকে বিচার শেখাচ্ছেন। এইসব জ্ঞান উনাদের মিটিংয়ে দেন। আমাদের দেয়ার দরকার নেই। এদিকে সংসদে উত্থাপিত বিলে বিচারকদের পূর্ণ বৎসরের জন্য অতিরিক্তি পেনশন হিসেবে মাসিক সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৫শত টাকা প্রদান এবং প্রধান বিচারপতির অবসরোত্তর সুবিধাদি গত বছরের মে মাস থেকে কার্যকর গণ্য করার বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিলে অবসরের পর বিচারকরা যে পরিমাণ গ্রস-পেনশন প্রাপ্য হবেন, তার অর্ধেক বাধ্যতামূলকভাবে সমপর্নের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, কোন বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে মাসিক বেতনের সমহারে এবং অর্ধ গড় বেতনের ছুটিতে থাকাকালে মাসিক বেতনের অর্ধেক হারে ছুটিকালীন বেতন পাবেন। পূর্ণ গড় বেতনে প্রদত্ত  ছুটি, অর্ধ গড় বেতনে প্রদত্ত ছুটির দ্বিগুণ হিসেবে গণনা করা হবে। তবে অর্ধ গড় বেতনে প্রাপ্য ছুটির হিসাব সংরক্ষিত থাকতে হবে। কোন বিচারক তার মোট কর্মকালীন ছুটির শর্তানুযায়ী অর্ধ গড় বেতনে ৩৬ মাস ছুট ভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া পূর্ণ গড় বেতনের ছুটি একালীন পাঁচ মাস এবং অন্য কোনো ছুটি ১৬ মাসের অধিক হবে না। কোনো বিচারক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ করলে কোনো ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। কোনো বিচারক অনভিপ্রেত কোনো আঘাতের দ্বারা আহত হয়ে কর্মে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতা ছুটি প্রাপ্য হবেন। এ ছাড়া কোনো বিচারক অনুমোদিত ছুটি বা অবকাশের অতিরিক্ত অনুপস্থিত থাকলে কোনো বেতন প্রাপ্য হবেন না। বিলে বিচারকদের আঘাত জনিত আনুতোষিক এবং পেনশন সুবিধা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments