ভারতের কৃষকরা অবশেষে আন্দোলন স্থগিত করেছেন। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ৩৭৮ দিন ধরে রাজপথে থাকার পর তারা বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকার ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের জন্য কমিটি গঠন করা এবং কৃষকদের ওপর থেকে সব মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর কৃষকরা আপাতত আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার কৃষক নেতা গুরনাম সিং জানান, আগামী ১৫ জানুয়ারি সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে একটি বৈঠক করবেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা। যদি সরকার তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে সে ক্ষেত্রে বিক্ষোভের বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, কেন্দ্র আমাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আপাতত আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কৃষক নেতা দর্শন পাল সিং জানান, সিংঘু সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকরা আগামীকাল শনিবার সেখান থেকে সরে যাবেন। আগামী সোমবার পাঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরে প্রার্থনা করবেন তারা।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বিক্ষোভরত কৃষকদের একটি চিঠি দেওয়ার পরই আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে। সরকারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এমএসপি অর্থাৎ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
আন্দোলনের সময় কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশ। অন্য রাজ্যগুলোকে এ নিয়ে অনুরোধ জানানো হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে কৃষকদের আপত্তির বিষয়গুলো নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তার আগে ওই বিল সংসদে পেশ হবে না। খড় পোড়ানো বন্ধ করার আইনে কৃষকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের ধারা আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পরও কৃষকরা আন্দোলন থেকে সরেননি। তাদের দাবি ছিল, বিষয়টির আইনি সুরাহা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এর মধ্যে সরকার ওই আইন বাতিলের পাশাপাশি কৃষকদের সব দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁরা গতকাল আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।