হোটেল হায়াতে শুক্রবারের হামলা ছিল মে মাসে প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদের দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমালিয়ার প্রথম বড় জঙ্গি হামলা। অবশেষে দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লড়াই চালিয়ে জঙ্গিদের কবল থেকে হোটেলকে মুক্ত করেছে সে দেশের সেনাবাহিনী। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন জঙ্গিরা আগ্নেয়াস্ত্র এবং গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালিয়ে ১০ জন নিরাপত্তা কর্মীকে হত্যা করার পাশাপাশি হোটেলের মধ্যে থাকা বেসামরিক নাগরিকদেরও গুলি করে হত্যা করেছে। জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২১ জনের। আহত হয়েছেন ১১৭ জন। হামলার হাত থেকে বেঁচে ফেরা এক প্রত্যক্ষদর্শী আদেন আলী রয়টার্সকে বলেছেন যে তিনি হোটেলে এক কাপ চা পান করছিলেন যখন তিনি প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। জঙ্গিরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তিনি অন্যদের সঙ্গে কম্পাউন্ড ওয়ালের দিকে ছুটে যান।আলী বলেন, “আমরা প্রায় জনা ১২ লোক পালাচ্ছিলাম। হোটেল থেকে বের হতেই দেখতে পেলাম আমাদের মধ্যে ৮ জন মাত্র বেঁচে আছে। বাকিরা গুলিতে মারা গেছিল। ” নিরাপত্তা বাহিনী টানা কয়েক ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর উপরের তলায় নিজেদের কক্ষে আটকে থাকা কয়েকজনকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
একজন সিনিয়র পুলিশ কমান্ডার জানান, নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে সোমালিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলি হাজি বলেছেন, “২১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। হোটেলে জঙ্গি হামলায় ১১৭ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে যে সব দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তার উপর ভিত্তি করে এই সংখ্যা জানানো হয়েছে। এমনও হতে পারে, মৃত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে কবর দিয়েছেন আত্মীয়রা। সেই হিসাব এর মধ্যে নেই।”সে দেশের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আল কায়দার মদতপুষ্ট শাবাব জঙ্গি সংগঠন এই আক্রমণ চালিয়েছে। আক্রমণের দায়ও নিয়েছে তারা। জঙ্গি হামলায় বিলাসবহুল হোটেলটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন সামরিক কর্মকর্তা মহম্মদ আলি বলেন, “আমরা এখনও হোটেলের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিকের ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখছি তার মধ্যে কোনো বিস্ফোরক সামগ্রী আছে কিনা। ”
সূত্র : রয়টার্স