Sunday, October 1, 2023
spot_img
Homeধর্মঅন্তরের ইবাদত

অন্তরের ইবাদত

কিছু ইবাদত এমন, যেগুলো অন্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ মন আমাদের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নিয়ন্ত্রক। যখন মন ঠিক পরিশুদ্ধ হয়ে যায়, তখন অন্য সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ঠিক হয়ে যায়। পাশাপাশি সেগুলোর ইবাদতও যথাযথ হতে থাকে।

নিম্নে অন্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ইবাদত তুলে ধলা হলো—

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা : ঈমানের পর বান্দার অন্যতম অন্তরের ইবাদত হলো, আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা স্থাপন করা। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত অন্তরে আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ভালোবাসা জন্ম নেবে না, ততক্ষণ বান্দা ইবাদতের স্বাদ পাবে না। ঈমানে পূর্ণতা আসবে না। এ কারণে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর জন্য ভালোবাসায় দৃঢ়তর। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৫)

আল্লাহর রহমতের আশা করা : পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তিনি (আল্লাহ) বলেন, যারা পথভ্রষ্ট, তারা ছাড়া আর কে তার রবের অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়?’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৫৬)

তাই গুনাহ হয়ে গেলে তাওবা করে আল্লাহর রাস্তায় ফিরে আসতে হবে। এবং আল্লাহর রহমতের আশা করতে হবে। আশা করা যায়, আল্লাহ মাফ করে দেবেন।

আল্লাহকে ভয় করা : আল্লাহর রহমতের আশা রাখতে হবে মানে এই নয় যে বেপরোয়া হয়ে উঠবে। বরং আল্লাহকে ভয় করাও অন্তরের ইবাদত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি আল্লাহর কৌশল থেকেও নিরাপদ হয়ে গেছে? বস্তুত ক্ষতিগ্রস্ত সমপ্রদায় ছাড়া কেউ আল্লাহর কৌশলকে নিরাপদ মনে করে না। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯৯)

ইখলাস : ইখলাস হলো আমল ও ইবাদতের প্রাণ। এর সম্পর্ক অন্তরের সঙ্গে। তাই পবিত্র কোরআনে ইখলাসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের এ ছাড়া আর কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে। ’ (সুরা : বাইয়্যিনাহ, আয়াত : ৫)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের শরীর ও অবয়বের দিকে তাকান না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে লক্ষ করেন। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৩৬)

রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসা : আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তিনটি গুণ যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারে। এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে বেশি প্রিয় হওয়া। দুই. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা। তিন. কুফরিতে ফিরে যাওয়া আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৪১)

আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা : অন্তরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো, কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। এর প্রতিদানস্বরূপ মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন বিশেষ সংবর্ধনা দেবেন। উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা নবী নন এবং শহীদও নন। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে তাঁদের মর্যাদার কারণে নবীরা ও শহীদরা তাঁদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হবেন। সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের অবহিত করুন, তাঁরা কারা? তিনি বলেন, তাঁরা ওই সব মানুষ, যাঁরা আল্লাহর মহানুভবতায় পরস্পরকে ভালোবাসেন, অথচ তাঁরা পরস্পর আত্মীয়ও নন এবং পরস্পরকে সম্পদও দেননি। আল্লাহর শপথ! তাঁদের মুখমণ্ডল যেন নূর এবং তাঁরা নূরের আসনে উপবেশন করবেন। তাঁরা ভীত হবেন না, যখন মানুষ ভীত থাকবে। তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়বেন না, যখন মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকবে। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, ‘জেনে রেখো! আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না। ’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬২) (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫২৭)। মহান আল্লাহ আমাদের সবার অন্তর পরিশুদ্ধ করুন। অন্তরের পাশাপাশি আমাদের সব ইবাদত কবুল করুন। আমিন

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments