অনর্থক কথা-কাজ মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৮)
কখনো কখনো একটি কথা সারা জীবনের দুঃখের কারণ হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি কথাই মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে পৌঁছে দিতে পারে।
মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে। বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুজানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, অথচ আল্লাহ তাআলা তার এ কথার কারণে তাঁর সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য স্বীয় সন্তুষ্টি লিখে দেন। আবার তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টির কথা বলে, যার সম্পর্কে সে চিন্তাও করে না যে তা কোন পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছবে। অথচ এ কথার কারণে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৯)
এর প্রমাণ ইবলিস শয়তান। একটি বাক্যই তাকে কিয়ামত পর্যন্ত অভিশপ্ত করে দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি বলেন, হে ইবলিস, আমি যাকে আমার দুই হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, নাকি তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদা থেকে। তিনি বলেন, তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। কেননা নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত। আর নিশ্চয়ই তোমার ওপর আমার অভিশাপ থাকবে, কর্মফল দিন পর্যন্ত। ’ (সুরা : সদ, আয়াত : ৭৫-৭৮)
মানুষকে আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেও অনর্থক কথা বলার অনুমতি নেই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা সেগুলোকে হাসিঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৬)
আর যদি সে কথাগুলো মানুষকে কষ্ট দিত, তা তো আরো বিপজ্জনক। কবি ইয়াকুব হামদুনি বলেছেন, ‘তরবারির ক্ষতের আরোগ্য আছে, কিন্তু জীবের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতের আরোগ্য নেই। ’ (তাজুল উরুস, পৃষ্ঠা ৩৭৩)
যারা মুমিন, তারা এমন করতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০১৩)
অতএব আমাদের সবার উচিত, সব ধরনের অনর্থক কথা ও কাজ বর্জন করা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনোনিবেশ করা।